রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

নতুন মুসলিম দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে বাংসামরো।

পূর্ব এশিয়ার ফিলিস্তিন নামে পরিচিত বাংসামরো আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে যোগ হতে চলেছে। এটি মিন্দানাও অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত একটি অঞ্চল।
আগামী জানুয়ারি মাসেই বিশ্ব মানচিত্রে স্বায়ত্বশাসিত মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বাংসামরো। এটি একটি অখ্যাত ও নির্যাতিত মুসলিম জনপদ এটি।
এই বাংসামরোর জনসংখ্যা ২ কোটি ৫৬ লাখ। এর মধ্যে ৯২ শতাংশই মুসলিম।
প্রায় শতবছর ধরে নিপীড়িত এই জনপদের রয়েছে সুদীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। স্পেনিশ ও বৃটিশদের পর বাংসামরো মুসলিমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে সংগ্রাম করছে ফিলিপাইন সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধিকারের জন্য। এতে লাখো মুসলিমের জীবনহানি ঘটেছে দীর্ঘদিন ধরে।
বাংসামরো ফিলিপাইনের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। আর এ কারণেই হয়তো ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এর প্রতি নজর দেয়নি। ফলে এই এলাকা এখনো অনুন্নত।
স্বাধীনতাকামী মুসলিম জনপদটির জন্য খুব কম দেশই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। কিন্তু এর পরও তারা নিজেদের আগ্রহ ও চেতনার বলে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। উল্লেখ্য, মরোদের দীর্ঘ সংগ্রামের পর এবারই ফিলিপাইন সরকারের প্রেসিডেন্ট দুতার্তে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংসামরো’ স্বায়ত্বশাসিত রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এই বাংসামরো অঞ্চলটি খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ। প্রতিরক্ষার জন্য রয়েছে ঈমানদীপ্ত তরুণ মুসলিমের দল। এরাই নতুন রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। কিন্তু ফিলিপিনো সরকার এ মুজাহিদবাহিনী মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্ট ভেঙে দিতে চায়।
মিন্দানাওয়ের এ অঞ্চলটি অর্থনীতির দিক থেকে দুর্বল। আর্থিক সামর্থ্য মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। তাতে কী? ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনাময় ব্যপ্তি দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যাচ্ছে, নতুন এই সরকারের প্রধান হবেন ড. মুরাদ ইবরাহিম। মরো ইসলামিক লিবারেশন ফ্রন্টের আপোসহীন সংগ্রামী এই নেতা বাংসামরো জনগণের আশার আলো জ্বেলেছেন।
মুরাদ ইবরাহিমের আপোসহীনতা ও দৃঢ় মনোবলের সুফল আজকের বাংসামরোর স্বায়ত্বশাসিত সরকার। সেখানকার জনগণ যেমন উচ্ছ্বসিত ও উদ্বেলিত স্বাধীনতার স্পর্শে, তেমনই মুসলিম উম্মাহও বুকভরা আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে মরো জনপদের প্রতি।
সৌঃ আওয়ার ইসলাম

বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৮

টেরোরিস্ট আমরিকান ডলার কেন বিশ্ব শাসন করছে?

সৌদি রাজা, পৃথিবীর বোঝা !
টেরোরিস্ট আমরিকান ডলার কেন বিশ্ব শাষন করছে? এই পোস্টে সহজে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর চেয়ে সহজে আমি বুঝাতে পারতাম না।
পেট্রো ডলার কি? তেলের বিপরীতে ডলারই হচ্ছে পেট্রো ডলার। অর্থাৎ আপনি যদি পেট্রোলিয়াম জাতীয় তেল কিনতে চান আপনাকে তা ডলার দিয়েই কিনতে হবে। তো এতে সমস্যা কি? সমস্যা হল আপনাকে তাদের মুখাপেক্ষী হতে হবে যারা কিনা ডলার বানায়। আর তারা হচ্ছে আমরিকা। ধরুন আপনি সৌদিতে গিয়ে বললেন যে আমি তেল কিনবো আপনাদের কাছ থেকে। তারা বলবে ইউএস ডলার দাও, তেল নাও। আপনি বললেন, নাহ! আমার কাছে ইউএস ডলার নেই। আর ইউএস ডলার আনতে গেলে আমরিকা তাদের বিভিন্ন অনাচার চাপিয়ে দিবে, তাই অন্য কোন সম্পদের বিনিময়ে তেল চাচ্ছি। তারা বলবে, নাহ হবে না। আমরা পেট্রো ডলার চুক্তি করেছি, আর আমরা চুক্তি ভাঙতে পারবো না।
.
.
১৯৭১ সালে আমরিকান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ঘোষণা দেয় যে গোল্ড নয়, ইউএস ডলারই হবে মূল রিসার্ভ, স্ট্যান্ডার্ড মানি! যা নিক্সন শক নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের ভয়ে মিত্রশক্তি তাদের রিসার্ভ গোল্ডগুলো আমরিকায় পাঠানো শুরু করে। অথচ পরে আমরিকা প্রতারণা করে বলে যে গোল্ড আমাদের কাছেই থাকুক, আর তোমরা ডলার নাও। বিশ্বের ২৫% গোল্ড আমরিকা দখল করে বসে আছে। আর বলছে ডলারকে তোমরা রিসার্ভ হিসেবে ইউস করো, এবং ডলারের এগেইন্সেটে তোমাদের কারেন্সী ছাপাও। দেখবেন এদেশের ক্ষেত্রে বলা হয়, আমাদের রিসার্ভ এতএত ইউএস ডলার। কেন ইউএস ডলার? কেন গোল্ড নয়? কেন ইউএস ডলারে সব হিসেব হচ্ছে? যদি ইউএসের পতন হয়, এই রিসার্ভ ডলারের কোন মূল্য নেই। কারণ এগুলো ফিয়াট মানি। এগুলো শূন্যের বিপরীতে বানানো, আইমিন জাস্ট ছাপানো হয়েছে। আর এখন এর মূল্য ইউএসের ইচ্ছার উপর নির্ভশীল। এভাবে ইউএস আমাদের তাদের মুখাপেক্ষী বানিয়ে শোষণ করছে, আর তাদের দাসস্ব বরণ করতে বাধ্য করছে।
.
.
কিন্তু জাস্ট ঘোষণা করেই কি তা হয়ে গেছে? কারণ ডলার যদি কোন কিছুর এগেইন্সেটে না বানানো হয়, তবে ইউএস যতখুশি তত ডলার ছাপাবে, যাকে তাকে যখন খুশি কিনবে, কিন্তু একটা সময় এতএত ডলার থাকায় মুদ্রাস্ফীতি হয়ে ডলার মান আর থাকবে না। কিন্তু এর জন্য ইউসের দরকার এমন কিছু যা গোল্ডের চেয়েও মূল্যবান, এবং যার অনেক চাহিদা আছে, আর যার এগেইন্সটে তারা ডলারের ব্যবসা করবে। গোল্ড তাদের পরিবর্তন করতেই হত। কারণ তারা এত এত ব্যবসায়িক ডিল করেছিল যে, সেগুলোর শোধ করার মত ডলার, আরো ভালো করে বললে গোল্ড তাদের কাছে ছিল না। অথচ ঠিকই তারা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন, জিলিয়ন জিলিয়ন ডলারের ডিল করছে, খরচ করছে। আদৌ কি তাদের থেকে গোল্ড অথবা অন্য কোন সম্পদ কমছে? কেবল ছাপানো ডলার কমছে! তারা সেটাই তো চায় যে তাদের ডলারই হোক একমাত্র ওয়ার্ল্ড কারেন্সী, কোন বাধা ছাড়াই।
.
.
তো ১৯৭৪ সাথে তারা গেল সৌদি আরবে। বিশ্বে প্রতিদিন এ্যাটলিস্ট ১০% তেল সৌদি বিক্রি করে। তাদের গিয়ে বললো, দেখো, তোমাদের সবরকম সামরিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন, অস্ত্র এবং টেকনোলজিকাল সাপ্লাই আমরা দিবো। এর বিপরীতে তোমরা তেল শুধুমাত্র ডলারে বিক্রি করবে। মাথামোটা সৌদিরা রাজী হয়ে গেল। কারণ তারা এমন শক্তিশালী সেনাবাহিনী বানাতে ভয় পায়, যারা কিনা তাদের সিংহাসনের জন্য হুমকি সরূপ। স্বাভাবিকভাবেই একজন যোগ্য সেনাপ্রধান যখন দেখবে যে পেট আর মাথা মোটারা সিংহাসনে বসে আছে, সে লাথি মেরে আগে তাদের সরাবে। তো সৌদি-গল্ফ এজন্য শক্তিশালী সেনাবাহিনী বানাবে না। তাদের দরকার তাদেরই মত পেট আর মাথা মোটা সেনাবাহিনী। আর এজন্য তারা আমরিকার উপর নির্ভশীল। এজন্য নিজ দেশে তারা আমরিকান বেইস বানাতে দিয়েছে। তারা চায় কেবল খেয়ে-দেয়ে ফূর্তি করে রাজতন্ত্র, আর তাদের ব্যবসাপাতি ধরে রাখা।
.
.
তো সৌদিরা তেল ডলারে বিক্রি করা শুরু করলো। তো ডলারগুলো নিয়ে তারা আবার আমরিকাকেই দিল, বিপরীতে আমরিকা তাদের বন্ড ধরিয়ে দিল যে, যখন দরকার পরে বন্ড ভাঙিয়ে খরচ করো। কারণ যত ডলার আমরিকা ছাপাচ্ছে, তত ডলারের সম্পদ কিন্তু আমরিকার কাছে নেই। তাই অতিরিক্ত ডলার না ছাপানোর জন্য, যখনই কোন দেশ ডলার জমায়, তখনই তাদের বন্ড ধরিয়ে দিয়ে সেই ডলার আবার অন্য কাজে লাগায়। আবার নিজেদের কাছেও অনেক ডলার রাখে না, নতুবা আমরিকার মধ্যে ডলারের মান কমবে। তাই তারা চায় ডলার ছড়িয়ে থাকুক। কোথাও জমে গেলে সেটার বিপরীতে বন্ড দিয়ে সেই ডলারগুলো নিয়ে আরেক জায়গায় ব্যাবহার করে, যেন ডলারের ব্যবসা জারী রাখা যায়, এবং মানুষকে মুখাপেক্ষী থাকতে বাধ্য করা যায়। বন্ড বলতে ধরুন ব্যাংকের প্রাইজ বন্ড। আপনারা তা কিনতে পারবেন, আবার ব্যাংকের কাছে একই মূল্যে ভাঙাতে পারবেন। তেমনি অনেক ইউএস ডলার আপনি নিজের কাছে জমিয়ে কি করবেন? আমরিকা বলে আমাদের কাছেই রিসার্ভ রাখুন, ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে রাখুন, পরে ইন্টারেস্ট সহ পাবেন। আর কত রেখেছেন সেটার দলীল হিসেবে বন্ড রাখুন। এই বন্ডকে তারা বলে ট্রেসারী বন্ড। এভাবে বারবার আর অপ্রয়োজনে ডলার না ছাপিয়েই আমরিকা কাজ চালাচ্ছে। আর মুদ্রাস্ফীতিও এড়িয়ে চলছে।
.
.
তাহলে তেলের দাম আসলে কারা ভোগ করছে? আমরিকা না সৌদি? ভেবে দেখুন, তেল আসলে বিক্রি করছে আমরিকা। সৌদি সরাসরি আমরিকার একটি প্রদেশ হিসেবে কাজ করছে। শুধু সৌদিই না, কাতার, কুয়েত, আমিরাত এবং আরো যারা আছে, সকলে ইউএসের অংশ হিসেবে কাজ করছে, এবং তাদের অর্থনীতি মূলত ইউএসের অর্থনীতির অংশ। এবং এসব দেশের রাজারা এর বিপরীতে রাজনৈতিক এবং সামরিক সাপোর্ট পাচ্ছে। আমরিকাকে নিজেদের দেশে সেনাঘাটি দিয়েছে। সাদ্দাম, গাদ্দাফি সরার চেষ্টা করেছিল, তারা নিজেরাই সরে গেছে। সম্ভবত বাদশাহ ফয়সালের ক্ষেত্রেও একই কারণ ছিল। আর আমরিকা তাদের ঘাড়ে চড়ে অর্থনীতিতে মনোপলি সৃষ্টি করে নিজেদের মনগড়া বিধান মানুষের উপর চাপাচ্ছে। ফেরাউনের মত নিজেকে আল্লাহর সাথে শরীক করছে, আল্লাহর বিধান রিপ্লেস করার মত স্পর্ধা দেখাচ্ছে। আর এতসব কিছু পেট্রো ডলারের বদৌলতে। সৌদি হল এই চুক্তির মধ্যমণী।
.
.
সৌদির সাথে এই চুক্তি টিকে থাকলে, আমরিকার যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন খরচ, সেগুলোর ভার আমাদের বহন করতে হবে। কারণ গোল্ড আমরিকার দখলে, তেল আমরিকার দখলে। তারা কেবল ডলার আর বন্ডের লুপিং চালিয়ে যুদ্ধ চালাচ্ছে, নিজেদের বাজার চালু রাখছে অথচ তাদের এত সম্পদ নেই যত তা অলরেডি খরচ করে ফেলেছে, আর কত ডলারের ডিল বাকি আছে সেগুলো হিসাব করলে বলতে হবে যে সেগুলা কারা শোধ করবে? এই আমার আপনার শোধ করতে হবে! কিভাবে? এই যে আমাদের টাকা, যা ডলারের বিপরীতে ছাপা হচ্ছে, সেই ডলারের মান কমলে আমাদের কষ্টে উপার্জিত টাকার মানও কমে যাবে, এই যতটুকু মান কমলো সেটা আমরিকার খরচের হিসাব ঠিক রাখতে কাটা গেছে। আর যতদিন পেট্রো ডলার চুক্তি থাকবে, তেলের বিনিময়ে ডলার তার প্রভুত্ব এভাবেই চালিয়ে যাবে।

ইসলামের ইতিহাসে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ। পার্ট-২

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছাড়া সাধারণভাবে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এক প্রকারের যুদ্ধ। তবে যুদ্ধের সাথে এর পার্থক্য হলো: যুদ্ধ রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের দাবিদার কর্তৃক পরিচালিত হয়, ফলে সেক্ষেত্রে ক্ষমতা ব্যবহারের বৈধতা বা আইনসিদ্ধতার দাবি করা হয়। এতে সাধারণত যোদ্ধাদেরকে লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং এর উদ্দেশ্য হয় সামরিক বিজয়। পক্ষান্তরে সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা দল রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকারী নয়। তবে তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চায়। এ জন্য তারা যোদ্ধা-অযোদ্ধা সবাইকে নির্বিচারে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে প্রাণ ও সম্পদের ক্ষতি করতে থাকে। যেন এক পর্যায়ে ভীত হয়ে সংশ্লিষ্ট সরকার ও জনগণ অভিষ্ট ‘রাজনৈতিক পরিবর্তন’ করতে রাজি হয়। সাধারণভাবে যারা সম্মুখ বা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের উপর সামরিক বিজয় লাভ করতে পারবে না বলে মনে করেন তারাই এরূপ সন্ত্রাসের আশ্রয় নেন। আমরা দেখেছি যে, প্রাচীন যুগ থেকে ইহূদী উগ্রবাদী ধার্মিকগণ ‘ধর্মীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছেন। মধ্যযুগে খৃস্টানদের মধ্যে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে সন্ত্রাসের অগণিত ঘটনা আমরা দেখতে পাই। বিশেষত ধর্মীয় সংস্কার, পাল্টা-সংস্কার both the Reformation and the Counter-Reformation)-এর যুগে ক্যাথলিক ও প্রটেস্টান্টদের মধ্যে অগণিত যুদ্ধ ছাড়াও যুদ্ধ বহির্ভূত সন্ত্রাসের অনেক ঘটনা দেখা যায়।
পক্ষান্তরে ইসলামের ইতিহাসে আমরা যুদ্ধ দেখতে পেলেও সন্ত্রাস খুবই কম দেখতে পাই। এ জাতীয় যে সামান্য কিছু ঘটনা আমরা দেখতে পাই তার মধ্যে অন্যতম খারিজীদের কর্মকাণ্ড ও বাতিনী সম্প্রদায়ের কর্মকাণ্ড। সমকালিন জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের কারণ ও প্রতিকার জানার জন্য এদের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা অপরিহার্য; কারণ কারণ ও তত্ত্ব সকল দিক থেকেই আধুনিক জঙ্গিবাদ প্রাচীন জঙ্গিবাদের সাথে একই সূত্রে বাঁধা।

ইসলামের ইতিহাসে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ: একটি পর্যালোচনা। পার্ট -১

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর লিখিত এ প্রবন্ধটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০০৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিলো।

১. সাধারণ পরিচিত

১. ১. জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস

জঙ্গি, জঙ্গিবাদ, জঙ্গিবাদী শব্দগুলি ইংরেজি militant, militancy) শব্দগুলির অনুবাদ। ইদানিং এগুলি আমাদের মধ্যে অতি পরিচিত ও অতিব্যবহৃত। শব্দগুলি কিছু দিন আগেও এত প্রচলিত ছিল না। আর আভিধানিক বা ব্যবহারিকভাবে এগুলি নিন্দনীয় বা খারাপ অর্থেও ব্যবহৃত হতো না। শাব্দিক বা রূপক ভাবে যোদ্ধা, সৈনিক বা যুদ্ধে ব্যবহৃত বস্তু বুঝাতে এই শব্দগুলি ব্যবহৃত হতো। বৃটিশ ইন্ডিয়ার কমান্ডার ইন চিফকে ‘জঙ্গিলাট’ বলা হতো।
শক্তিমত্ত বা উগ্র বুঝাতেও এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। (Oxford Advanced Learner’s Dictionary)-তে বলা হয়েছে: militant. adj. favouring the use of force or strong pressure to achieve one’s aim. …militant: n. militant person, esp. in politics[1]. Merriam-Wepster’s Collegiate Dictionary -তে বলা হয়েছে: militant 1: engaged in warfare or combat : fighting. 2: aggressively active (as in a cause).
এ সকল অর্থ কোনোটিই বে-আইনী অপরাধ বুঝায় না। কিন্তু আমরা বর্তমানে ‘জঙ্গি’ বলতে বুঝি রাজনৈতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে বে-আইনী ভাবে নিরপরাধ বা অযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, হত্যা ইত্যাদি অপরাধে লিপ্ত ব্যক্তি। আর এদের মতবাদকেই আমরা জঙ্গিবাদ বলি। এই অর্থে প্রসিদ্ধ ও সুপরিচিত পরিভাষা সন্ত্রাস।
সন্ত্রাস-এর পরিচয়ে এনসাইক্লোপিডীয়া ব্রিটানিকায় বলা হয়েছে: “terrorism: the systematic use of violence to create a general climate of fear in a population and thereby to bring about a particular political objective.. সন্ত্রাস: নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুশৃঙ্খলভাবে সহিংসতার ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো জনগোষ্ঠির মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা।”
মার্কিন সরকারের ফেডারেল বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফ. বি. আই) terrorism বা সন্ত্রাসের সংজ্ঞায় বলেছে: “the unlawful use of force and violence against persons or property to intimidate or coerce a government, the civilian population, or any segment thereof, in furtherance of political or social objectives: কোনো সরকার বা সাধারণ নাগরিকদেরকে ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ব্যক্তি বা সম্পদের বিরুদ্ধে ক্ষমতা বা সহিংসতার বেআইনি ব্যবহার করা।”
এই সংজ্ঞায় মূল কর্মের দিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। শক্তি, ক্ষমতা বা সহিংসতার ব্যবহার যদি বে-আইনী হয় তবে তা ‘সন্ত্রাস’ বলে গণ্য হবে। আর যদি তা ‘আইন-সম্মত’ হয় তবে তা ‘সন্ত্রাস’ বলে গণ্য হবে না। এখানে সমস্যা আইন ও বে-আইন নির্ণয় নিয়ে। এভাবে আমরা দেখছি যে, এভাবে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীকে চিহ্নিত করা কঠিন এবং এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ প্রায় অসম্ভব। এজন্য অন্য অনেক সমাজবিজ্ঞানী কর্মের উপর নির্ভর না করে আক্রান্তের উপর নির্ভর করে সন্ত্রাসকে সংজ্ঞায়িত করতে চেষ্টা করেছেন। তাদের ভাষায়: “terrorism is premeditated, politically motivated violence perpetrated against noncombatant targets: রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অযোদ্ধা লক্ষ্যের বিরুদ্ধে সহিংসতা সন্ত্রাস।”
যুদ্ধের ক্ষেত্রেও উভয় পক্ষ প্রতিপক্ষের সৈন্য ও নাগরিকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারে সচেষ্ট থাকে। তবে সন্ত্রাসের সাথে যুদ্ধের মৌলিক পার্থক্য হলো, সাধারণ যুদ্ধ ও গেরিলা যুদ্ধ উভয় ক্ষেত্রেই যোদ্ধারা মুলত যোদ্ধা বা যুদ্ধ বিষয়ক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সচেষ্ট থাকে এবং সামরিক বিজয়ই লক্ষ্য থাকে। পক্ষান্তরে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য থাকে না। এক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্যই হলো সামরিক অসামরিক নির্বিচারে সকল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা।
“Terrorism proper is thus the systematic use of violence to generate fear, and thereby to achieve political goals, when direct military victory is not possible. This has led some social scientists to refer to guerrilla warfare as the ‘weapon of the weak’ and terrorism as the ‘weapon of the weakest’: এজন্য মূলত সন্ত্রাস হলো যেখানে সামরিক বিজয় সম্ভব নয় সেখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সুশৃঙ্খলিতভাবে সহিংসতার ব্যবহারের মাধ্যমে ভীতি সঞ্চার করা। এজন্য কোনো কোনো সমাজবিজ্ঞানী বলেছেন যে, গেরিলা যুদ্ধ হলো দুর্বলের অস্ত্র এবং সন্ত্রাস হলো দুর্বলতমের অস্ত্র।”
১. ২. সন্ত্রাসের উৎপত্তি
প্রাচীন যুগ থেকেই বিভিন্ন দল, গোষ্ঠি ও রাষ্ট্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। তবে মানব ইতিহাসে প্রাচীন যুগের প্রসিদ্ধতম সন্ত্রাসী কর্ম ছিল উগ্রপন্থী ইহূদী যীলটদের (Zealots) সন্ত্রাস। খৃস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী ও তার পরবর্তী সময়ে রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে বসবাসরত ইহূদী উগ্রবাদী এ সকল ইহূদীরা নিজেদের ধর্মীয় ও সামাজিক সাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আপোসহীন ছিল। যে সকল ইহূদী রোমান রাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা করত বা সহঅবস্থানের চিন্তা করত এরা তাদেরকে গুপ্ত হত্যা করত। এজন্য এরা সিকারী the Sicarii: dagger men) বা ছুরি-মানব নামে প্রসিদ্ধ ছিল। এরা প্রয়োজনে আত্মহত্যা করত কিন্তু প্রতিপক্ষের হাতে ধরা দিত না।

জানালায় দূরের আকাশ! অতটা উদাস তোমাকে কি মানায়? ফুলদানির ফুল হয়ে থেকো, আয়ুর স্বল্পতায় কিইবা যায় আসে। যতটুকুই সময় থেকো চারিদিক মুখরিত করে রেখো।

জানালায় দূরের আকাশ! অতটা উদাস তোমাকে কি মানায়? ফুলদানির ফুল হয়ে থেকো, আয়ুর স্বল্পতায় কিইবা যায় আসে। যতটুকুই সময় থেকো চারিদিক মুখরিত করে রেখো।

টেরোরিস্ট আমরিকান ডলার কেন বিশ্ব শাসন করছে?

সৌদি রাজা, পৃথিবীর বোঝা !
টেরোরিস্ট আমরিকান ডলার কেন বিশ্ব শাষন করছে? এই পোস্টে সহজে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর চেয়ে সহজে আমি বুঝাতে পারতাম না।
পেট্রো ডলার কি? তেলের বিপরীতে ডলারই হচ্ছে পেট্রো ডলার। অর্থাৎ আপনি যদি পেট্রোলিয়াম জাতীয় তেল কিনতে চান আপনাকে তা ডলার দিয়েই কিনতে হবে। তো এতে সমস্যা কি? সমস্যা হল আপনাকে তাদের মুখাপেক্ষী হতে হবে যারা কিনা ডলার বানায়। আর তারা হচ্ছে আমরিকা। ধরুন আপনি সৌদিতে গিয়ে বললেন যে আমি তেল কিনবো আপনাদের কাছ থেকে। তারা বলবে ইউএস ডলার দাও, তেল নাও। আপনি বললেন, নাহ! আমার কাছে ইউএস ডলার নেই। আর ইউএস ডলার আনতে গেলে আমরিকা তাদের বিভিন্ন অনাচার চাপিয়ে দিবে, তাই অন্য কোন সম্পদের বিনিময়ে তেল চাচ্ছি। তারা বলবে, নাহ হবে না। আমরা পেট্রো ডলার চুক্তি করেছি, আর আমরা চুক্তি ভাঙতে পারবো না।
.
.
১৯৭১ সালে আমরিকান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিক্সন ঘোষণা দেয় যে গোল্ড নয়, ইউএস ডলারই হবে মূল রিসার্ভ, স্ট্যান্ডার্ড মানি! যা নিক্সন শক নামে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের ভয়ে মিত্রশক্তি তাদের রিসার্ভ গোল্ডগুলো আমরিকায় পাঠানো শুরু করে। অথচ পরে আমরিকা প্রতারণা করে বলে যে গোল্ড আমাদের কাছেই থাকুক, আর তোমরা ডলার নাও। বিশ্বের ২৫% গোল্ড আমরিকা দখল করে বসে আছে। আর বলছে ডলারকে তোমরা রিসার্ভ হিসেবে ইউস করো, এবং ডলারের এগেইন্সেটে তোমাদের কারেন্সী ছাপাও। দেখবেন এদেশের ক্ষেত্রে বলা হয়, আমাদের রিসার্ভ এতএত ইউএস ডলার। কেন ইউএস ডলার? কেন গোল্ড নয়? কেন ইউএস ডলারে সব হিসেব হচ্ছে? যদি ইউএসের পতন হয়, এই রিসার্ভ ডলারের কোন মূল্য নেই। কারণ এগুলো ফিয়াট মানি। এগুলো শূন্যের বিপরীতে বানানো, আইমিন জাস্ট ছাপানো হয়েছে। আর এখন এর মূল্য ইউএসের ইচ্ছার উপর নির্ভশীল। এভাবে ইউএস আমাদের তাদের মুখাপেক্ষী বানিয়ে শোষণ করছে, আর তাদের দাসস্ব বরণ করতে বাধ্য করছে।
.
.
কিন্তু জাস্ট ঘোষণা করেই কি তা হয়ে গেছে? কারণ ডলার যদি কোন কিছুর এগেইন্সেটে না বানানো হয়, তবে ইউএস যতখুশি তত ডলার ছাপাবে, যাকে তাকে যখন খুশি কিনবে, কিন্তু একটা সময় এতএত ডলার থাকায় মুদ্রাস্ফীতি হয়ে ডলার মান আর থাকবে না। কিন্তু এর জন্য ইউসের দরকার এমন কিছু যা গোল্ডের চেয়েও মূল্যবান, এবং যার অনেক চাহিদা আছে, আর যার এগেইন্সটে তারা ডলারের ব্যবসা করবে। গোল্ড তাদের পরিবর্তন করতেই হত। কারণ তারা এত এত ব্যবসায়িক ডিল করেছিল যে, সেগুলোর শোধ করার মত ডলার, আরো ভালো করে বললে গোল্ড তাদের কাছে ছিল না। অথচ ঠিকই তারা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন, জিলিয়ন জিলিয়ন ডলারের ডিল করছে, খরচ করছে। আদৌ কি তাদের থেকে গোল্ড অথবা অন্য কোন সম্পদ কমছে? কেবল ছাপানো ডলার কমছে! তারা সেটাই তো চায় যে তাদের ডলারই হোক একমাত্র ওয়ার্ল্ড কারেন্সী, কোন বাধা ছাড়াই।
.
.
তো ১৯৭৪ সাথে তারা গেল সৌদি আরবে। বিশ্বে প্রতিদিন এ্যাটলিস্ট ১০% তেল সৌদি বিক্রি করে। তাদের গিয়ে বললো, দেখো, তোমাদের সবরকম সামরিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন, অস্ত্র এবং টেকনোলজিকাল সাপ্লাই আমরা দিবো। এর বিপরীতে তোমরা তেল শুধুমাত্র ডলারে বিক্রি করবে। মাথামোটা সৌদিরা রাজী হয়ে গেল। কারণ তারা এমন শক্তিশালী সেনাবাহিনী বানাতে ভয় পায়, যারা কিনা তাদের সিংহাসনের জন্য হুমকি সরূপ। স্বাভাবিকভাবেই একজন যোগ্য সেনাপ্রধান যখন দেখবে যে পেট আর মাথা মোটারা সিংহাসনে বসে আছে, সে লাথি মেরে আগে তাদের সরাবে। তো সৌদি-গল্ফ এজন্য শক্তিশালী সেনাবাহিনী বানাবে না। তাদের দরকার তাদেরই মত পেট আর মাথা মোটা সেনাবাহিনী। আর এজন্য তারা আমরিকার উপর নির্ভশীল। এজন্য নিজ দেশে তারা আমরিকান বেইস বানাতে দিয়েছে। তারা চায় কেবল খেয়ে-দেয়ে ফূর্তি করে রাজতন্ত্র, আর তাদের ব্যবসাপাতি ধরে রাখা।
.
.
তো সৌদিরা তেল ডলারে বিক্রি করা শুরু করলো। তো ডলারগুলো নিয়ে তারা আবার আমরিকাকেই দিল, বিপরীতে আমরিকা তাদের বন্ড ধরিয়ে দিল যে, যখন দরকার পরে বন্ড ভাঙিয়ে খরচ করো। কারণ যত ডলার আমরিকা ছাপাচ্ছে, তত ডলারের সম্পদ কিন্তু আমরিকার কাছে নেই। তাই অতিরিক্ত ডলার না ছাপানোর জন্য, যখনই কোন দেশ ডলার জমায়, তখনই তাদের বন্ড ধরিয়ে দিয়ে সেই ডলার আবার অন্য কাজে লাগায়। আবার নিজেদের কাছেও অনেক ডলার রাখে না, নতুবা আমরিকার মধ্যে ডলারের মান কমবে। তাই তারা চায় ডলার ছড়িয়ে থাকুক। কোথাও জমে গেলে সেটার বিপরীতে বন্ড দিয়ে সেই ডলারগুলো নিয়ে আরেক জায়গায় ব্যাবহার করে, যেন ডলারের ব্যবসা জারী রাখা যায়, এবং মানুষকে মুখাপেক্ষী থাকতে বাধ্য করা যায়। বন্ড বলতে ধরুন ব্যাংকের প্রাইজ বন্ড। আপনারা তা কিনতে পারবেন, আবার ব্যাংকের কাছে একই মূল্যে ভাঙাতে পারবেন। তেমনি অনেক ইউএস ডলার আপনি নিজের কাছে জমিয়ে কি করবেন? আমরিকা বলে আমাদের কাছেই রিসার্ভ রাখুন, ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে রাখুন, পরে ইন্টারেস্ট সহ পাবেন। আর কত রেখেছেন সেটার দলীল হিসেবে বন্ড রাখুন। এই বন্ডকে তারা বলে ট্রেসারী বন্ড। এভাবে বারবার আর অপ্রয়োজনে ডলার না ছাপিয়েই আমরিকা কাজ চালাচ্ছে। আর মুদ্রাস্ফীতিও এড়িয়ে চলছে।
.
.
তাহলে তেলের দাম আসলে কারা ভোগ করছে? আমরিকা না সৌদি? ভেবে দেখুন, তেল আসলে বিক্রি করছে আমরিকা। সৌদি সরাসরি আমরিকার একটি প্রদেশ হিসেবে কাজ করছে। শুধু সৌদিই না, কাতার, কুয়েত, আমিরাত এবং আরো যারা আছে, সকলে ইউএসের অংশ হিসেবে কাজ করছে, এবং তাদের অর্থনীতি মূলত ইউএসের অর্থনীতির অংশ। এবং এসব দেশের রাজারা এর বিপরীতে রাজনৈতিক এবং সামরিক সাপোর্ট পাচ্ছে। আমরিকাকে নিজেদের দেশে সেনাঘাটি দিয়েছে। সাদ্দাম, গাদ্দাফি সরার চেষ্টা করেছিল, তারা নিজেরাই সরে গেছে। সম্ভবত বাদশাহ ফয়সালের ক্ষেত্রেও একই কারণ ছিল। আর আমরিকা তাদের ঘাড়ে চড়ে অর্থনীতিতে মনোপলি সৃষ্টি করে নিজেদের মনগড়া বিধান মানুষের উপর চাপাচ্ছে। ফেরাউনের মত নিজেকে আল্লাহর সাথে শরীক করছে, আল্লাহর বিধান রিপ্লেস করার মত স্পর্ধা দেখাচ্ছে। আর এতসব কিছু পেট্রো ডলারের বদৌলতে। সৌদি হল এই চুক্তির মধ্যমণী।
.
.
সৌদির সাথে এই চুক্তি টিকে থাকলে, আমরিকার যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন খরচ, সেগুলোর ভার আমাদের বহন করতে হবে। কারণ গোল্ড আমরিকার দখলে, তেল আমরিকার দখলে। তারা কেবল ডলার আর বন্ডের লুপিং চালিয়ে যুদ্ধ চালাচ্ছে, নিজেদের বাজার চালু রাখছে অথচ তাদের এত সম্পদ নেই যত তা অলরেডি খরচ করে ফেলেছে, আর কত ডলারের ডিল বাকি আছে সেগুলো হিসাব করলে বলতে হবে যে সেগুলা কারা শোধ করবে? এই আমার আপনার শোধ করতে হবে! কিভাবে? এই যে আমাদের টাকা, যা ডলারের বিপরীতে ছাপা হচ্ছে, সেই ডলারের মান কমলে আমাদের কষ্টে উপার্জিত টাকার মানও কমে যাবে, এই যতটুকু মান কমলো সেটা আমরিকার খরচের হিসাব ঠিক রাখতে কাটা গেছে। আর যতদিন পেট্রো ডলার চুক্তি থাকবে, তেলের বিনিময়ে ডলার তার প্রভুত্ব এভাবেই চালিয়ে যাবে।