শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৯

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি(Virtual Reality) কি ?


উত্তরঃ বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের মত অবস্থা সৃষ্টি করা৷ যেমনঃ রঙ্গিন চশমা, সাউন্ড ইফেক্ট, 3D video ইত্যাদির মাধ্যমে কল্পনা নির্ভর অবস্থা তৈরী করাকেই যা বাস্তবের মত মনে হয় তাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বলে৷

সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৯

ডিজিটাল কারেন্সি


একসময় মানুষ স্বর্ণ বা রূপ্য মুদ্রা ব্যবহার করত যা স্পর্শ করা যেত, গুণা যেত, পকেটে বা লকারে সংরক্ষণ করা যেত। মুদ্রা আত্মসাৎ করতে হলে তালা ভাঙতে হত।
অতঃপর এলো-
কাগুজে মুদ্রা যা মানুষ টাচ করতে পারে, গুণতে পারে, পকেটেও রাখে কিন্তু সূক্ষ্ম পথ দিয়ে টাকা লুট হয়ে যায়। আত্মসাৎ করতে তালা ভাঙতে হয় না। মুদ্রার মাণ কমিয়ে দিলেই হয়।
এর পরে এসেছে-
ডিজিটাল কারেন্সি। যা মানুষ না ধরতে পারে, না পকেটে বা লকারে রাখতে পারে। ব্রেইন ওয়াসড মানুষ শুধু ডিজিট টাইপ করতে পারে। ১০, ১০০, ১০০০, ১ লক্ষ, ১ কোটি শুধু নাম্বার। নাম্বার ডেবিট হচ্ছে নাম্বার ক্রেডিট হচ্ছে। ছিনতাই করা সবার জন্য সহজ। কাগুজে মুদ্রায় শুধু প্রশাসন ও বিগ ফার্মা মুদ্রা আত্মসাৎ করতে পারত। ডিজিটাল কারেন্সিতে সাধারণ হ্যাকারও চুরি করতে পারে। আপনার জীবনের সকল সম্পদ সংরক্ষিত থাকছে কয়েকটি ডিজিট পাসওয়ার্ডের ভিতরে। আর একটি প্লাস্টিকের কার্ডের ভিতরে। নিজ মুদ্রার সংরক্ষণ করা হচ্ছে বিশ্বখ্যাত চোর লুটেরাদের কাছে। ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিদের চাইতে বেশি যুলুম কোনো সংস্থা কখনোই করে নাই। আপনি তাদের কাছে নিজের মুদ্রা গচ্ছিত রাখছেন, এটা কত বড় বোকামি ভেবে দেখেছেন কী? শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দিচ্ছেন। আমেরিকায় ক্যাশ ট্রান্সেকশনের হার দিনকে দিন কমছে, সবাই ডিজিটাল ট্রান্সেকশন করে এখন। বিডিতেও শুরু হয়েছে। মানুষ ফিজিকাল মানি থেকে সরে ডিজিটাল মানির দিকে ঝুঁকছে। দুয়েকশ টাকার জন্য পরনির্ভর হয়ে যাচ্ছে।
Kaisar Ahmad

যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে ভারত, স্বাধীন হবে আসাম....


আসামে ভারত বিরোধী মুভমেন্ট প্রতিনিয়ন জোরদার হচ্ছে। সেই সাথে শক্তিশালী এবং সুগঠিত হয়ে উঠছে আসামের স্বাধীনতাকামী সসস্ত্র সংগঠন "ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)"।
গতবছর আসামের ৪০লক্ষ বাঙালী নাগরিকের নাগরিকত্ব অবৈধ ঘোষণা করে তাদেরকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা চালানোয় আসামের বাঙালী কমিউনিটিতে ভারত বিরোধীতা আরো প্রবল হয়ে উঠেছে। আসামের জনসংখ্যার হিসেবে তাদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩০%। ভারত সরকার এই ৪০লক্ষ বাঙালীকে বাংলাদেশে অধীবাসিত করার জোর কুটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ভারত চাপিয়ে দিলেও ৪০লক্ষ জনগনকে গ্রহনের মত অবস্থা বাংলাদেশের নেই। ফলে দুদেশের সীমান্তে পরে থেকে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে আসামের বাঙালীরা সসস্ত্র প্রতিরোধের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
আসামের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। ৪৮% অসমিয় ভাষীই হচ্ছে আসামের প্রধান এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠি। অসমীয়দের মাঝেও ভারত বিরোধীতা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। স্বাধীনতাকামী সংগঠন "উলফা" এদেরই সৃস্টি। যদিও জাতিগত ভাবে অসমীয়রা বাঙালীদের পছন্দ করেনা, তবে ভারত বিরোধীতার ক্ষেত্রে তারা ঐক্যবদ্ধ।
অদ্ভুত হলেও সত্য হলো স্বাধীনতার প্রায় ৭০ বছর পার হলেও আসামের অধীবাসিরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পায়নি ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে আসামে গত বছর আবেদন করেন প্রায় ৩ কোটি ২৯ লাখ মানুষ। ১ জানুয়ারি প্রথম দফায় এক কোটি ৯০ লাখ মানুষকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দিয়ে এনআরসি তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এরই মাঝে দেড় লাখ জনগনের নাগরিকত্বের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে সরকার।
এদিকে আসামের জনগনের নাগরিকত্বের উপর বিভিন্ন ধরনের শর্তারোপ করে একটি বিল পাস করতে যাচ্ছে দিল্লি সরকার। আসামে যদি এই নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাস হয় তাহলে ভারত থেকে আসামকে স্বাধীন করার হুমকি দিয়েছেন আসামের কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি(কেএমএসএস)। এই সংগঠনটিও পুরোপুরি আদি অসমীয় নাগরিকদের। অর্থাৎ জাতী,ধর্ম নির্বিশেষে আসামের সমস্ত জনগন এখন প্রচন্ড ভারত বিরোধী।
ভারতের মানচীত্র খেয়াল করলে দেখবেন, আসাম যদি স্বাধীন হয়ে যায় তাহলে ভারতের মেঘালয়,অরুনাচল, ন্যাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরা রাজ্যগুলো ভারতের মেইন ল্যান্ড থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে (পুর্ব-পশ্চিম পাকিস্তানের মত)। সেই সাথে মেঘালয় রাজ্যটি বাংলাদেশ এবং আসামের ভেতর পুরোপুরি ল্যান্ডলক হয়ে পরবে। অরুনাচল প্রদেশ এবং চিকেন নেক নিয়ে চীন বহুদিন ধরেই ভারতকে দৌড়ের উপর রেখেছে। আসাম মুক্ত হলে চীনের অরুনাচল প্রদেশ দখল করা হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র। সেই সাথে মেঘালয় রাজ্য বাংলাদেশ অথবা আসামের দখলে যাওয়াও প্রায় নিশ্চিত...(মেঘালয় রাজ্যের জনসংখ্যা মাত্র ৩০ লক্ষ)
(Wings Of Aviations)

দাজ্জালের মহা ফিতনা ও বর্তমান বিশ্ব : (নারী, Hyper Sexuality ও বর্তমান প্রজন্ম, এটা কি শেষ যামানা?


দাজ্জালিয়াত → নারী সম্প্রদায়কে বিকারগ্রস্ত করে এক নির্লজ্জ সমাজ কায়েম করা।
দাজ্জালি সিস্টেমের উদ্দেশ্যই হল আল্লাহর বিধানের অবজ্ঞা করে একদম বিপরিত বিধানে আমাদেরকে জড়িয়ে দেয়া। ইসলামিক ভাবে যুগ যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত সত্য কে ভেঙ্গে দিয়ে ধর্মের একদম বিপরীত একটা ব্যবস্থা কায়েম করা হল দাজ্জালের একটা প্রতারনা। রাষ্ট্র ও অর্থ ব্যবস্থা আমাদের এতটা ক্ষতি করেনি যতটা করছে তথা কথিত নারী স্বাধীনতা ও নারীবাদীতা। রাষ্ট্র ও অর্থ কাঠামো মানুষকে প্রভাবিত করে মানসিক দাসত্বে বন্দি করতে পারে না। কিন্তু এই নারী ক্ষমতায়নের প্রচার প্রসার সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশোচনাবোধ, বিনম্রতা, ভদ্রতা, লজ্জাবোধ সহ সবকিছু কে প্রভাবিত করে সমাজে মূলভিত্তিকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের সময় অনেক শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এতে দেশে থাকা তাদের ভাষায় ঘরের চাকরানী (নারীদেরকে) ঘর থেকে বের করে কে অপেক্ষাকৃত কম কায়িক শ্রমের (বিশেষ করে ট্যাক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে) কাজে লাগিয়ে সেই চাহিদা পূরণ করা হয়। আর এই ভাবেই মনোভাব জেগে ওঠে যে নারীদের ক্ষমতায়ন করে দেশের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা উচিত। A country cannot progress if half its population is enslaved in the kitchen (একটি দেশ উন্নত হতে পারে না যদি তাদের অর্ধেক জনগন রান্নাঘরে দাসী হয়ে আঁটকে থাকে) তবে ঘরে শাহজাদি হালতে থাকা নারীরা কেন ঘর থেকে বের হয়ে কাজ করবে? তাই সেমিনার, শিক্ষা, আন্দোলন ইত্যাদির মাধ্যমে মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে নারীরা পরাধীন চাই স্বাধীনতা, সমতা। ফলে নারী ক্ষমতায়নের নামে হয়ে গেল ফেমিনিস্ট বিপ্লব আর একের পর এক আন্দোলন তারপর থেকে লেগেই আছে।
আমেরিকায় ১৯৬০ সালের দিকে হল Sexual Revolution আর সর্বশেষে এখন হচ্ছে Free the nipple Movement যা এখন ৫০ টির ও বেশি দেশে ছড়িয়ে পরেছে, নারীরা এখন সমধিকার চায় রাস্তায় পুরুষ যেভাবে খালি গায়ে হাটতে পারে ঠিক তেমনি নারীরাও শরীরের উপরিভাগ খোলা রেখে নির্দ্বিধায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে পারবে তার জন্য এই আন্দোলন হচ্ছে। তাই হাজারো নারী উপরিভাগ (Top less)উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। যেন একঝাক পশুর পাল, পশুরা যেমন উলঙ্গ হয়ে থাকে ঠিক তেমন তবে বেচারা পশুরা সভ্যতা বহির্ভূত, আর এই সকল মানুষেরা আধুনিক সভ্যতায় সজ্জিত।
যাইহোক নারী ক্ষমতায়নকে প্রমোট করতে বিভিন্ন কনফেরেন্স হয়েছে ও হচ্ছে যেমন বেইজিং+, সোশ্যাল ইঞ্জেনিয়ারিং প্রোগ্রাম ইত্যাদি আর সেই গুলোতে বিভিন্ন উদ্যোগ বিভিন্ন সময়ে নেয়া হয়েছে যেমন সমকামীতাকে স্বাভাবিক ভাবে নিতে হবে অস্বাভাবিক বা অসামাজিক চিন্তা করা যাবে না, স্ত্রীর অনিচ্ছায় স্বামী যদি তাকে বিছানায় নিয়ে যায় তবে সেটাকে বৈবাহিক ধর্ষণ/যেনাহ (Marital Rape) বলা হবে। সংসারে কাজের জন্য নারীর বেতন চাওয়ার অধিকার আছে, একজন পুরুষ তার শরীরের শক্তি ব্যবহার করে উপার্জন করে তেমনি নারী শরীর কে ব্যবহার করে আয় করতে পারে তাই এদের কে পতিতা/বেশ্যা (Prostitutes) না বলে সম্মানিত যৌনকর্মী (Sex Worker) বলতে হবে, উত্তরাধিকার ও তালাক এ সমান অধিকার থাকতে হবে ইত্যাদি আর সর্ব শেষে যদি কোন দেশ এইগুলো কার্যকরের বিরোধীতা করে তবে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
“দাজ্জালের দলে সবচেয়ে শেষে যারা শামিল হবে তারা হলো নারীরা; অবস্থা এমন হবে যে পুরুষ তার মা, মেয়ে, বোন এবং খালাকে বেঁধে রাখতে বাধ্য হবে যাতে তারা বের হয়ে তার কাছে না যেতে পারে”
“দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী হবে ইয়াহুদী ও নারীরা”
(কানযুল উম্মাল, ৭ম খণ্ড, হাদীস নং ২১১৬ ও ২১১৪, মু’জামে তাবরানিঃ ২৪/১৬৯- মাকতাবায়ে শামেলা)
দাজ্জাল থেকে মেয়েরা এতটা প্রভাবিত কেন বা কিভাবে হবে যে পুরুষরা বাধ্য হয়ে তাদের বেঁধে রাখবে? স্পষ্টত ভাবে একটাই কারন তা হলো, তাদের ব্রেইন ওয়াস করা হবে, নারীদের মগজ সম্পূর্ণ ধোলাই হয়ে গেছে তাই আমরা তাদের যতই বুঝবো তারা বুঝবেই না। রমরমা মেডিয়া, ফ্যাশন, শিক্ষা আর সর্বপরি নারী স্বাধীনতার আন্দোলন তাদের মগজ ধোলাই করে দিয়েছে। তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে চল আইডল, ডান্স এইগুলোতে অংশগ্রহণ করি, হিজাব বাদ দেই, আবেদনময়ী হয়ে ওঠি ইত্যাদি। এই আধুনিক পশ্চিমা নারীবাদী আন্দোলন ১০০ বছর ধরে নারীদের মগজ ধোলাই করে যাচ্ছে, মেয়েদের সাধারণ চিন্তা করার ক্ষমতাকেও কেড়ে নিয়েছে। আমরা পূর্বেই বলেছি যে দাজ্জালই হল এই আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার (মাস্টার মাইন্ড) পরিকল্পনাকারী।
মাশাআল্লাহ আমাদের অনেক বোনদেরকে দাজ্জাল এখনো প্রভাবিত করতে পারেনি, তারা নিজের হিজাব কে বর্জন করেনি আর ইনশাআল্লাহ্ করবেও না।
Hyper Sexuality ও বর্তমান প্রজন্ম:
নারী পুরুষের একে অপরের সহযোগী নয় প্রতিযোগী এই ধারনা দেয়া হয়েছে। নারী ও পুরুষের শারীরিক গঠন, মানসিক বিকাশ ও সর্বপরি তাদের কর্ম-কাজ বা Function সবই আলাদা। আল্লাহ্ নির্ধারণ করে দিয়েছেন পুরুষ ও নারী দের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট ও কাজের ধরন।
কিয়ামতের একটা অন্যতম নিদর্শন হল পুরুষরা নারীদের অনুকরণ (বেশ ধারন) করবে আর নারীরা পুরুষের অনুকরণ (বেশ ধারন) করবে।
পবিত্র কুরআনে সূরা লাইলে রাত ও দিন এবং নারী ও পুরুষের জন্মের কসম খাওয়া হয়েছে। সেখানে বুঝানো হয়েছে রাত ও দিন এবং পুরুষ ও নারী পরস্পর থেকে ভিন্ন এবং তাদের প্রত্যেক জোড়ার প্রভাব ও ফলাফল পরস্পর বিরোধী।
রাত ও দিন যেভাবে একসাথে মিলে একটা পরিপূর্ণ দিবস হয় ঠিক তেমনি নারী ও পুরুষ এক সাথে মিলে একটা সুন্দর যুগল হয়। দিনের সাথে পুরুষের বৈশিষ্ট ও রাতের সাথে নারীর বৈশিষ্টের মিল রয়েছে যেমন দিন হল রোদ্রজ্জোল কঠিন, মানুষকে ক্ল্যান্ত করে দেয়, ঘামিয়ে দেয়, আর প্রক্ষান্তরে রাত হল সুন্দর, মনোরম, কমল, শিতল, শান্তি, দিনের কাঠিন্যকে নির্মল করে দেই এমন। দিনের শেষে সূর্য আস্তে আস্তে ডুবে যেমন সারাদিনের কঠোর পরিশ্রম শেষে পুরুষ নিস্তেজ হয়ে যায় নিজেকে সপে দেয় শান্তির রাতের (নারীর) পরিবেশে। আর যখন রাত শেষে সূর্য উদয় হয় তখন তা আর ধীরে ধীরে উঠে না, (যেন মনে হয় সে উঠতে চাচ্ছে না শান্তির নীড় থেকে) তাই একবারেই প্রকান্ড বিস্ফোরণে উঠে পুরো বিশ্ব কে আলোকময় করে দেই।
কিন্ত দাজ্জাল চাই না রাত রাত থাকুক সে চায় রাতকে দিন বানিয়ে দিতে, তাই নারীরা পুরুষে পরিনত হচ্ছে। যখন এক জন নারী পুরুষের কাজ করছে তখন সে আর নারী থাকে না, সে তার ব্যবহার, গলার কন্ঠ, কথার ভঙ্গী, তার কাপড় (শার্ট, প্যেন্ট, টাই, কোট) সব একজন পুরুষের মত করে নেয়, কল্পনা করুন একজন ট্রাফিক নারী পুলিশকে। এভাবেই নারীরা পুরুষের বেশ ধারন করছে।
একজন ছেলের দাঁড়ী সম্পূর্ণ মুন্ডিয়ে ফেলার মাধ্যমেই সে নারীর বেশ ধারন করে। অবাক হয়ে যাই যখন দেখি এই শেষ কয়েক শতাব্দি ছাড়া ইতিহাসে আর কোন এমন জাতি সভ্যতা পাওয়া যায় না যারা সম্পূর্ণ ভাবে ক্লিন সেভ করত। যাইহোক, আজ যে শহর যত বেশি রাতকে দিনে পরিনত করেছে সে শহরে নারী তত বেশি পুরুষে পরিনত হয়েছে, লন্ডন, প্যারিস, নিওইয়র্ক, সিঙ্গাপুর, বা বাংলাদেশে উত্তরা-গুলশান দেখুন সেখানে নারীরা তাদের নারীত্ব বিসর্জন দিয়েছে। নারীবাদী আন্দোলনে সমর্থক কোন নারী কে সবচেয়ে আগে তার নারীত্ব বিসর্জন দিতে হয়। নারীর কোমল ও লাজুকতা কাঠিন্যে বদলে যায়। যখন নারী আর নারী থাকে না তখনই নারীর প্রতি পুরুষের আকর্ষণ কমতে থাকে। ফলে প্রকাশ পায় বিকৃত যৌনকাঙ্ক্ষা আর আকর্ষণ বাড়ে ক্লীন সেভ ছেলেদের প্রতি আর বৈধতা পায় সমকামিতা।
বর্তমান যুগ হল Hyper Sexuality‘র যুগ অর্থাৎ বিশ্ব কে অতি মাত্রায় যৌনতা ও নগ্নতা দিয়ে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে তাই মানুষ খুব সহজে অতি মাত্রায় যৌনতার দিকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে প্রণোদিত হচ্ছে। পিন থেকে প্লেন পর্যন্ত সকল কিছুতেই নারী কে ব্যবহার করা হচ্ছে। নারী পুরুষের একে উপরের টান স্বাভাবিক তবে সেই টান কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এই পশ্চিমা সভ্যতা। আজ রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, মার্কেট সকল জায়গায় এমন দুটো পরস্পর বিপরিত আকর্ষিত ব্যক্তি দের পাশাপাশি নিয়ে এসে মানুষের সংযমশীলতা কে শেষ করে দেয়া হয়েছে। টিভি, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, সাইন বোর্ড, পেপার, নাটক, মুভি, বই, উপন্যাস সহ সকল জায়াগায় যৌনতার সুড়সুড়ি ও ছড়াছড়ি ফলে ছেলেদের কামনা বাসনা কে আরো জাগিয়ে তাদেরকে পশু তে পরিনত করা হচ্ছে সর্ব শেষে বিয়ে কে সোনার হরিন বানিয়ে যৌনতা কে সহজ করে দেয়া হয়েছে, এতে আজ এক নির্লজ্জ পাশচিক সমাজ তৈরি হয়েছে, এমন যুবক ও তরুণ প্রজন্ম তৈরি হয়েছে যারা সারাদিন নেশা আর কামনা বাসনা নিয়ে চিন্তা করে তাদের কাছে ধর্ম একটি বিরক্তকর বিষয় তারা শুধু ভোগ করতে চাই।
এক নির্লজ্জ ও অভদ্র প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে যারা নাচ-গান, নর্তকীতে ডুবে রয়েছে [তাদের মাথার উপর গান-বাজনা এবং নর্তকীদের নৃত্যানুষ্ঠান শোভা পাবে। (ইবনে মাজা-৪০২০)], যারা বাবা-মায়ের সাথে এমন আচরন করছে যেন তারা দাস-দাসী আর সন্তানেরা মুনিব। [দাসীর গর্ভ থেকে মনিবের জন্ম হবে (মুসলিম-১০৬)] GF/BF ও বন্ধু বান্ধবের জন্য অঢেল সময় থাকলেও সেকেলে বাবার সাথে দুটা কথা বলার সময় নেই। এবং এরা মায়ের চেয়ে বেশি স্ত্রীর আনুগত্য করছে। [বন্ধুর প্রতি সদাচারী ও পিতার সাথে দুর্ব্যবহারকারী হবে, স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের অবাধ্য হবে (সহীহ তিরমিযী-১৫৪১)] আর স্ত্রীরা আজ স্বামীদের ব্যবসায় সাহায্য করছে [ব্যবসা বানিজ্যে স্ত্রী, স্বামীকে সহযোগিতা করবে (মুসনানে আহমদ-৩৮৭০)]। ফলে মা এখন আর বাসায় থাকেনা ফেমিনিস্ট আন্দোলনের বলে যদিও কিছুটা মেটারনিটি লিভ, প্যারেন্টাল লিভ পেয়েছে তবুও সারাদিন তো আর বাচ্চার সাথে থাকতে পারে না তাই ডে কেয়ার সেন্টারে বাচ্চা লালন-পালন করতে হচ্ছে। আর বিপরিত দিকে খুলছে বৃদ্ধাশ্রম হয়তো পার্ট-টাইম মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত থাকতে পারে কিনা এই সন্দেহের কারনেই সন্তান বড় হয়ে মা-বাবা কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাচ্ছে। আল্লাহু আলাম।
নবী করীম (সাঃ) বলেছেন-"ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ নিহিত। কেয়ামত সংঘটিত হবে না,যতক্ষণ না অশ্লীলতা ও বেলেল্লাপনা বেড়ে যাবে"
সমাজে অশ্লীলতা বেড়ে গেছে আর এমন এক নারী সম্প্রদায় তৈরি হয়েছে যারা কাপড় পড়েও উলঙ্গ থাকে। তারা এমন কাপড় পড়ে যা তাদের নগ্নতাকে আরও বেশিকরে প্রকাশ করছে। বর্তমান সমাজে মেয়েরা যে সকল পোশাক পড়ে তার মধ্যে বেশির ভাগই হল এই নগ্নতা ফুটিয়ে তোলার পোশাক (এরা কখনো জান্নাতে যাবে না)
আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,নবী করীম সা. বলেছেন- “দুই প্রকার জাহান্নামী সম্প্রদায় এখনো আমি দেখিনিঃ
১) ষাঁঢ়ের লেজ সদৃশ চাবুক দিয়ে মানুষকে প্রহারকারী অত্যাচারী সম্প্রদায়।
২) কাপড় পড়বে কিন্তু তবুও নগ্ন থাকবে এমন নারী সম্প্রদায়। আবেদন সৃষ্টি করতে তাদের মাথাগুলো একপাশে ঝুকিয়ে দেবে। তাদের মাথাগুলো উটের কুঁজের মত উঁচু দেখাবে। এ দু’টি দলের কখনো জান্নাতে প্রবেশ তো দূরের কথা;জান্নাতের সুঘ্রাণও কপালে জুটবে না। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ তো এত....এত.... দূর থেকেই অনুভব করা যায়। (মুসলিম-৭৩৭৩/৫৭০৪)
রাস্তা-ঘাটে খোলামেলা যৌনাচার চোখে পড়বে,বাঁধা দেয়ার কেউ থাকবে না। সে কালের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যক্তি সেই, যে সাহস করে বলবে- রাস্তা থেকে সরে গিয়ে একটু আড়ালে যদি এই কাজ করতে!! সে কালে সে-ই এ কালে তোমাদের আবু বকর-উমর সদৃশ।-” (মুস্তাদরাকে হাকিম-৮৫১৬)
এখানে নারী পুরুষ উভয়ের সম্মতিতে রাস্তা-ঘাটে খোলামেলা যৌনাচার হবে বুঝানো হয়েছে যা শুধু এই কালেই সম্ভব কারন পৃথিবীর ইতিহাসে নারী জাতি কখনো এতটা নির্লজ্জ ছিল না যে তারা রাস্তায় নেমে এমনটা করার চিন্তাও করবে। পুরুষের মধ্যে সর্ব কালেই এমন কিছু নির্লজ্জ লোক পাওয়া যেত তবে নারীদের মধ্যে নয়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন পাবলিক প্লেইসে যেমন- স্পেনের ক্যানেরি আইল্যান্ড, ফ্রান্সের Cap D'Agde সৈকত, জাপানের কাবকিচ, থাইল্যান্ডের প্যাটপং ছাড়াও প্রভৃতি স্থানে এবং টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদিতে খোলামেলা ভাবে যৌনতা দেখা যায়। আমাদের দেশেও বিভিন্ন উৎসবে টিএসসি, রমনা সহ সকল পার্কে খোলা মেলা জায়গায় এটা হচ্ছে কেউ এদের কে একটু আড়ালে যাও বলার সাহসও করে না উপরুন্ত যারা তাদের দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে তাদের কে নির্লজ্জ মনে করা হয়।
[উল্লেখ্য যে ২৫ বছর আগে শহীদ ড. আব্দুল্লাহ আযযাম (রহ.) বলেছিলেন “স্ত্রী সাথে ছাড়া পাশ্চাত্যে থেকে লেখা-পড়া করা হারাম, আবার বলছি হারাম, হারাম, হারাম” (তাফসীরে সুরা তওবা)। আল্লাহ মালুম উনি যদি এখন থাকতেন তো কি বলতেন। সেই সময় তো মানুষের হাতে হাতে ফোন আর ঘরে ঘরে টিভি ইন্টারনেট ছিল না]
এভাবেই আজ পুরোসমাজ কে অশ্লীলতা বেহায়াপনায় ভরে দিয়েছে আর এটা এমন এক সমস্যা যে যারা ১০-১২ বছর আগে নিজেদের যৌবনকাল পার করেছে তারা আঁচও করতে পারেনা তারা মনে করে সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে অথচ একটুও খেয়াল করে না আজ এই সিস্টেমের ছোঁয়ায় তার সেই শিশু সুলভ বাচ্চা আর বাচ্চা নয় এখন সে যুবকের মত চিন্তা করে। সবশেষে এই সিস্টেম তাদের সোশ্যাল কাঠামো তৈরি করতে গিয়ে পারিবারিক কাঠামোকে পুরোপুরি ভেঙ্গে দিয়েছে। এই ভাবে বাড়ছে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা। তাই আজ অ্যামেরিকায় ৫০% অবৈধ সন্তান জন্ম হয় আর তাদের কেই আর্মি তে নিয়োগ দেয়া হয় দেশপ্রেম জাগানো তো খুব সহজ কারন তারা মনে করে পুরো আমেরিকার মানুষ তাদের পরিবার সকল পুরুষ তাদের বাবা। ২০০০ বছর আগে প্লেটো যেমন সমাজ বানাতে চেয়েছিল দাজ্জাল তেমনি সমাজ আজ বানিয়ে ফেলেছে।
শেষ জামানা ও বর্তমান বিশ্ব:
ইহুদিরা মাসজিদুল আকসা কে ভেঙ্গে টেম্পল অব সলোমন (হাইকল) বানানো ও মালহামা বা মহাযুদ্ধের মাধ্যমে একটি সুপার পাওয়ার গ্রেটার ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। মালহামা কি? কেন হবে? ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের এই নিয়ে বিশ্বাস কি? কাদের মধ্যে হবে? রোম কে? কত লোক মারা যাবে? কে জয়ী হবে? এই সকল প্রশ্নের উত্তর কুরআন ও হাদিসের আলোকে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। তবে তার আগে একটা গুরুত্বপূর্ণ কৌতূহল না দমিয়ে সামনে যাওয়া যায় না আর সেটা হল- এটা কি শেষ যামানা? আমরা কি পৃথিবীর ইতিহাসের সমাপ্তি দেখতে যাচ্ছি?
এটা কি শেষ জামানা?
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) ব্যতিত কেউ কিয়ামতের নির্দিষ্ট সময় সম্পর্কে অবগত নয় (সুরা আ’রাফঃ ১৮৭)। উম্মাহ কে সামনে আসা ফিতনা গুলো সম্পর্কে অবগত করানোও নবুয়াতের দায়িত্বের মধ্যে পরে তাই আমরা কিয়ামতের কত নিকটে তা বুঝা ও জানার জন্য অসংখ্য নিদর্শন হাদিসে আলোচিত হয়েছে। কোন লং জার্নি তে একটু পর রাস্তার পাশে থাকা বোর্ডে উল্লেখ থাকে যে গন্তব্য আরও এত দূর আর ৫০০ কি.মি.......৪০০....২০০...১০০..
..৫০...১ কি.মি ও পৌঁছে গেছি। আল্লাহর রাসূল (সা)’এর বর্ণীত হাদিস ঠিক তেমনি, আমরা আস্তে আস্তে করে কিয়ামতের কত নিকটে যাচ্ছি তা দেখিয়ে দিচ্ছে। আমরা অর্থনীতি ও নারী ক্ষমতায়ন টপিকের মধ্যে বেশ কিছু এমন হাদিস তুলে ধরেছি।
আলোচনার সুবিধার্থে কিয়ামতের নিদর্শন ও ফিতনার হাদিস কে আমরা কিছু ভাগে ভাগ করতে পারি যেমন- কোন কোন হাদিসে বলা হয়েছে, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষন পর্যন্ত না, আবার কোথাও-অচিরেই/
অদূরেই তোমরা দেখতে পাবে, এমন সময় আসবে, অদূরে এমন হবে, শেষ জামানায় ও কিয়ামতের নিকটকালীন সময়ে, ইত্যাদি।
আর কাঙ্ক্ষিত জবাব পেতে আমাদের শুধু হাদিসে জিব্রাঈল (আঃ), আর ওই সকল হাদিস যেখানে ‘শেষ জামানায়’ বা ‘কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে’ শব্দগুলো ব্যবহার হয়েছে, এবং দাজ্জাল নিয়ে হাদিস গুলো দেখলেই আমরা খুব সহজে ও স্বল্প সময়ে একটা পরিস্কার ধারনা পাবো।
উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বর্ণনা করেন-“একদা আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খিদমতে ছিলান। এমন সময় একজন লোক আমাদের কাছে এসে হাযির হলেন। তাঁর পরিধানের কাপড় ছিল সা’দা ধবধবে, মাথার কেশ ছিল কাল কুচকুচে। তাঁর মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন ছিল না। আমরা কেউ তাঁকে চিনি না। তিনি নিজের দুই হাঁটু নাবী (সা)-এর দুই হাঁটুর সাথে লাগিয়ে বসে পড়লেন আর তার দুই হাত নাবী (সা)-এর দুই উরুর উপর রাখলেন।“ এভাবেই জিব্রাঈল (আঃ) একে একে রাসূল (সা) কে ৫টি প্রশ্ন করেন আর উত্তর পাওয়ার পর আবার সেই উত্তর কে যথার্থতা প্রদান করেন। প্রশ্ন গুলো ছিল যথাক্রমে ইসলাম কি? ঈমান কি? ইহসান কি? এইগুলোর উত্তর পাওয়ার পর বললেন-শেষ সময় সম্পর্কে কিছু বলুন? এর উত্তরে রাসুল (সা) বলেন,এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চাইতে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি অধিক অবহিত নন। তারপর জিব্রাঈল (আঃ) আবারো বললেন আচ্ছা এর নিদর্শনগুলো বলুন? তখন নবী (সাঃ) বললেনঃ
"ক্রীতদাসীরা তাদের মনিব কে প্রসব করবে এবং তুমি খালি পা ও নগ্নদেহ গরীব মেষ রাখালদেরকে সুউচ্চ দালান কোঠা নির্মাণ করতে দেখবে এবং তা নিয়ে গর্ব করতে দেখবে।" (সহীহ মুসলিম-ঈমান অধ্যায়, হাদিস নং-১)
হাদিসে জিব্রাঈল (আঃ) এর মত আর কোন হাদিস নেই যেখানে এত আরকান উসুল ও ইসলামের মৌল তত্ত্ব এক সাথে আলোচিত হয়েছে এই একই হাদিসের শেষ দুটি অংশ হল শেষ সময় (Final Hour) নিয়ে আর তার নিদর্শন সম্পর্কে। যেহেতু এই গুরুত্বপূর্ণ হাদিসে শেষ সময় এর কথা বলা হয়েছে তাই একটা প্রশ্ন থেকে যায়, কেন বিশ্বাসীদের শেষ জামানা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন? এটার অনেক গুলো কারন আছে যেমন প্রথমত আমাদের বিশ্বাস কে আরও মজুবত ও অটল করে যখন দেখি কি ভাবে ১৪০০ বছর আগের কথা গুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে তখন অজান্তেই কালিমায়ে শাহাদাত উচ্চারিত হয়ে ওঠে যেমন উমরা (রা), সোহাইল ইবেন আমর (রা) এর সম্পর্কে বলা রাসুল (সা) এর ভবিষ্যৎবানী সত্যি হতে দেখে কালিমায়ে শাহাদাত পড় ছিলেন। দ্বিতীয় কারন হল আমরা কিভাবে এই সব ফিতনা থেকে বেঁচে থাকতে পারব তা নির্ণয় করা, এই ছাড়াও আরও কারন আছে।
ক) দাসী মুনিবকে জন্ম দিবে
এই হাদিসে উল্লেখিত দুটি সাইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সাইন হল দাসী মুনিবকে জন্ম দিবে। বর্তমানে কিভাবে সন্তানেরা তাদের জননীর সাথে দাসীর মত ব্যবহার করছে তা প্রতিটা ঘরেই দেখা যায়। বেশির ভাগ আলেম, মায়ের সাথে সন্তানের মন্দ আচরন কেই এই হাদিসের ব্যখ্যা হিসেবে উপস্থাপন করেন, অন্যদিকে একটু রূপক হিসেবে ধরে এটার একটা আলাদা ব্যখ্যা দেয়া যায়, সেটা হল- শেষ জামানা হবে দাসত্বের আর এর ফলে দেখা দেবে এমন কিছু এলাকা অঞ্চল ও জাতি যাদের উপর দাসত্বের বোঝা চাপানো হবে আর সৃষ্টি হবে কিছু মুনিব দেশ ও দাস সুলভ দেশ যেমন আমেরিকা ও তৃতীয় বিশ্বের দেশ সমূহ (আফ্রিকা, ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ ইত্যাদি)। যখন দাজ্জালের অনুসরনে মেয়েরা ছেলেতে রূপান্তর হয় (১২ নং পর্ব দেখুন) তখন তারা তাদের নারীয়ত্বের পাশাপাশি তাদের ফার্টিলিটি (সন্তান জন্মানোর ক্ষমতাকেও) হারিয়ে ফেলে। ফলে সেই মুনিব দেশের (আমেরিকার) দম্পতি দাস দেশ (ইন্ডিয়ায়) এসে নারীর গর্ভ ভাড়া (Surrogacy) করে। এই ভাবে ইন্ডিয়ার এক গরীব নারী কে টাকার বিনিময়ে রাজি করানো হয় আর সেই আমেরিকান স্বামীর বীর্য দাসীর গর্ভাশয়ে মেশিনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয় আর ৯ মাস সে দাসী মেয়ে কে ফার্টিলিটি ক্লিনিকে রাজকীয় ভাবে রাখা হয় আর যখন সেই কাঙ্ক্ষিত বাচ্চা প্রশব করে তখন সেই বাচ্চা কে নিয়ে মুনীব দাম্পতি মুনিব দেশে চলে যায় আর এই মা আবার আগের মত দাসী হিসেবেই নিজের জায়াগার চলে যায়, আর অন্যদিকে সেই সন্তান মুনিবের মত বড় হতে থাকে, সে জানেও না তার দাসি মা কে, সে আদ্য আছে নাকি মরেছে। দিনের পর দিন এই ফার্টিলিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ছে বর্তমানে ইন্ডীয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এই পেশা শিল্পের রূপ নিয়েছে। এই হল দাসীর গর্ভ থেকে মুনিবের জন্ম। যদি আমরা এই রূপক ব্যখ্যা টা গ্রহন করি তাহলে বলা যায় এই হাদিস বাস্তবায়ন শুধু বর্তমানেই পরিলক্ষিত হয়েছে ইতিহাসে কোন সময়ে এমনটা ঘটা সম্ভব ছিল না।
খ) উঁচু উঁচু দালান বানানোর প্রতিযোগিতা
এই নিদর্শনটি সরাসারি চোখের মধ্যে ধরা দেই। যে আরবের বেদুঈনরা গরীব ছিল পড়নে কাপড়ও থাকতো না কিন্তু তেল আবিস্কারের পর থেকে আরবদেশ গুলো অনেক ধনী হয়ে যায় আর মুসলিম উম্মাহর কথা ভুলে নিজদের জাতীয়তাবাদ ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে উঁচু উঁচু বিল্ডিং বানানোর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে। এভাবেই তৈরি হয় বুরজ খালিফা, মক্কা ক্লক টাওয়ার, আর সর্ব শেষ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উঁচু বিল্ডিং কিংডম টাওয়ার বানাচ্ছে সৌদি রাজ পরিবার।
শেষ জামানা সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস
► ‘কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে’ এই সব বিষয় গুলো অধিক হারে ঘটবে- ব্যক্তি বিশেষে সালাম দেয়া হবে, বানিজ্য ব্যাপক হয়ে যাবে, এমনকি ব্যবসায়ে স্ত্রী-স্বামী সহযোগিতা করবে, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হবে (তাদের খোঁজখবর নেয়ার সময় থাকবে না) মিথ্যা সাক্ষ্য মহামারীর আকার ধারন করবে, সত্য সাক্ষ্য গুম করা হবে এবং লেখালেখি বেশি হতে থাকবে। (মুসনাদে আহমদ- ৩৮৭০)
► ’কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে’ (ইসলামী) জ্ঞান উঠে যাবে মূর্খতা ছেয়ে যাবে (বুখারি-৬৬৫৪ ও মুস্লিম-৬৯৫৯)
বর্তমানে অপরিচিত কে কেউ সালাম দেয় না, প্রযুক্তি ও যানবাহনের কারনে ব্যবসা ব্যাপক হয়েছে, স্ত্রী জব করে, আত্নীয় তো দূরের কথা মা বাবার ই খবর নিচ্ছে না, বিচার ব্যবস্থা আরও খারাব লেখালেখি কত বেড়ে গেছে আমার লেখাও তারই একটি উদাহরন, কতজন সহীহ ভাবে নামাজ পড়তে পারে ইসলামি ইলম তো অনেক দুরের কথা অর্থাৎ উপরুক্ত সকল কিছু আমাদের সমাজে অধিক হারে হচ্ছে আর হাদিসে আছে যে কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে এই সব ঘটবে।
► আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,নবী করীম সা. বলেন- “ ‘কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে’ দ্রুত সময় পার হয়ে যাবে। (দ্বীনের) জ্ঞান কমে যাবে। পর্যায়ক্রমে ফেতনা প্রকাশ হতে থাকবে। ব্যয়কুণ্ঠতা প্রকাশ পাবে। অধিক হারে সংঘাতের ঘটনা ঘটবে। ‘সংঘাত’ কি -জিজ্ঞেস করা হলে নবীজী বলেন- হত্যাযজ্ঞ... হত্যাযজ্ঞ...।”(বুখারী ৬৬৫২)
দ্রুত পার হবে মানে সময়ের বরকত কমে যাবে যেমন ইমাম গাজ্জালী রহ উনার ৫৫ বছর জীবনে যত বই লিখেছেন আজ ৬০ বছরেরও কেউ উনার সব গুলো বই পড়ে শেষ করতে পারবে না, বিংশ শতাব্দি থেকে হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে, একের পর এক ফিতনা প্রকাশ পাচ্ছে।
► আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,নবী করীম সা. বলেন-“’কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে’ প্রতারণার যুগ আসবে,মিথ্যুককে তখন সত্যবাদী এবং সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদী প্রচার করা হবে। ঘাতককে বিশ্বস্ত আর বিশ্বস্তকে ঘাতক মনে করা হবে। জনগণের বিষয়ে তখন নির্বোধ গণ্ডমূর্খরা কথা বলতে থাকবে।” (তাবারানী-১২৩)
শেষ জমানায় ইসলামের মৌলিক সিড়িগুলো এক এক করে ভেঙ্গে পড়বে। তন্মধ্যে সর্বপ্রথম হচ্ছে কোরআনের শাসন ও সর্বশেষ নামাজ। বর্তমানে বিশ্বের ১০% মুসলিম ও নামাজ পড়ে না।
► আবু উমামা বাহেলী রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “অবশ্যই ইসলামের স্তম্ভগুলো একে একে ভেঙ্গে পড়বে। একটি ভেঙ্গে যাওয়ার সাথে সাথে মানুষ অপর স্তম্ভকে ধরে ফেলবে। সর্বপ্রথম ভাঙবে- কোরআনের শাসন। সর্বশেষে- নামায।-” (মুসনাদে আহমদ-২২২১৪, তাবারানী-৭৪৮৬)
সর্বশেষে একটা হাদিস উল্লেখ করি, (দাজ্জাল বিষয়ক)
►► হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা) বলেছেন, ‘যখন কোনো সম্প্রদায়ের পাপ বেড়ে যায়, তখনই সমাজের মসজিদগুলো সুসজ্জিত হয়। আর দাজ্জালের আবির্ভাবের সময় ঘনিয়ে না আসা পর্যন্ত মসজিদ গুলো সুসজ্জিত হবে না’ (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিলফিতান খন্ডঃ ৪,পৃষ্ঠাঃ ৮১৯)
এখন ইমাম মাহদী’র প্রকাশ ও মালহামা (মহাযুদ্ধ) বাকি আছে আর তা ছাড়া যেসকল ছোট নিদর্শন এখন পূর্ণ হয়নি সেগুলো তত সময়ে হয়ে যাবে, তখন বাকি থাকবে শুধু বড় সাইন গুলো ইসা (আ) এর আগমন, দাজ্জালের আত্নপ্রকাশ, দুখান, দাব্বাতুল আরদ, ভূমিধ্বস, ইত্যাদি। এই ছাড়াও অনেক গুলো হাদিস পর্ব ১২ তে আলোচিত হয়েছে।
উপরোক্ত নিদর্শন সমূহ বর্তমান সমাজে হুবহু বাস্তবায়িত হচ্ছে- এত কোন সন্দেহ নেই। দেখেও আমরা না দেখার ভান করছি। অথচ সাহাবায়ে কেরাম সামান্য কিছু ঘটলেই কত সতর্ক হয়ে যেতেন। মানুষকে কিয়ামতের নিদর্শন সম্পর্কে সচেতন করতেন। আল্লাহ পাক আমাদের সকল কে সঠিক জ্ঞান দান করুন।
ﺍﻟﻠَﻬُﻢَّ ﺃَﺭِﻧَﺎ ﺍﻻَﺷْﻴَﺎﺀَ ﻛَﻤَﺎ ﻫِﻲَ ،
“আল্লাহুম্মা আরিনাল আশ’ইয়া'আ কামা হিয়া” (হে আল্লাহ আমাদের প্রত্যেক জিনিসের আসল রূপ দেখাও যাতে বাহ্যিক রূপ দেখে প্রতারিত না হই)